তরমুজের বীজের ১৬টি উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা তরমুজের পাশাপাশি এর বীজেও নানা রকম পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যেগুলো শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকর বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।

তরমুজের-বীজের-উপকারিতা
তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে নিচের দেওয়া লেখাগুলো খুব যত্ন সহকারে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই মূলত আপনারা তরমুজের বীজের যাবতীয় গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।

সূচিপত্রঃ তরমুজের বীজের যাবতীয় গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন 

তরমুজের বীজের উপকারিতা

তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা তরমুজের বীজের যাবতীয় উপকারিতা গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। আমরা সাধারণত বাসায় যখন বাজার থেকে তরমুজ কিনে আনি তখন শুধু তরমুজের ভেতরের লাল অংশটুকু খেয়ে থাকি। আর এর মধ্যে যেগুলো বীজ থাকে তা ফেলে দেই।
 
এটি মোটেও ভালো কথা নয়। কেননা তরমুজ খাওয়ার ফলে যেমন আমাদের শরীরের নানা উপকার হয়ে থাকে। একইভাবে এর বীজ খাওয়ার ফলেও আমাদের শরীরের নানা উপকার হয়ে থাকে। তাই চলুন আজকে আমরা তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে কি কি ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় তা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। 

প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করেঃ  তরমুজের বীজ আমাদের শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমেরিকা ও লন্ডনের গবেষকরা নির্দেশনা দিয়ে থাকেন, তরমুজ খাওয়ার পর এর বীজগুলো ফেলে না দিতে। এই বীজগুলোকে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে নিয়ে তারপর খেতে বলেন। তরমুজের এই বীজ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি দূর হবে।
 
বিশেষ করে এটি দেহ গঠন এবং দেহের বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারে। হয়তো আমরা প্রতিদিন অনেক ধরনের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু সেই পরিমাণ প্রোটিন দেহে পাই না। তাই আপনারা চেষ্টা করবেন নিয়মিত পরিমান মতো তরমুজের বীজ খাওয়া। এটি খাওয়ার ফলে এখান থেকে ৬০% প্রোটিন দেহে পেয়ে থাকবেন। যা আপনার শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে। 

ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারঃ  তরমুজের বীজ মূলত একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার। এটি খাওয়ার ফলে এখান থেকে ভিটামিন বি শরীরে পাওয়া যায়। এই ভিটামিন বি আমাদের শরীরের স্নায়ু তন্ত্র এবং পরিপাক তন্ত্রকে সুস্থ এবং সবল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬ শরীরে পাওয়া যায়। যা শরীরের নানা উপকারে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনাদের উচিত তরমুজ খাওয়ার পর তরমুজের বীজ ফেলে না দিয়ে তা খেয়ে নেওয়ার। তাহলে শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভিটামিন পাওয়া সম্ভব হবে।

রক্তচাপ কমায়ঃ  যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাদের তরমুজের বীজ খাওয়া প্রয়োজন। কেননা তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ কমে থাকে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম নামক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ক্লান্তি দূর করেঃ  আমরা অনেক সময় কোন কাজ করতে গিয়ে অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ি। তাই এই সময় তরমুজের বীজ খাওয়া যেতে পারে। কেননা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শরীরের যাবতীয় ক্লান্তি দূর হয়ে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে। তবে শরীর চাঙ্গা করতে গিয়ে খুব বেশি তরমুজের বীজ খাওয়া উচিত নয়। কেননা এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আবার শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। তাই এদিকটা খেয়াল রাখা উচিত।

আয়রনের ঘাটতি দূর করেঃ  তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়ে থাকে। একাধিক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে নিয়মিত এক মুঠো তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি হয় না। বিশেষ করে যাদের অ্যানিমিয়া রোগ রয়েছে, তারা তরমুজের বীজ নিয়মিত খেতে পারেন। এটি খাওয়ার ফলে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপন্ন হওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। আর এর ফলে অ্যানিমিয়া রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

হজমের সমস্যা দূর করেঃ  তরমুজের বীজ হজমের সমস্যা দূর করতে ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই যাদের পেটের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা, এসিডিটির সমস্যা এবং হজমের সমস্যা রয়েছে, তারা তরমুজের বীজ খেতে পারেন। এছাড়াও এতে আয়রন, কপার, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন বি৯ এর মত নানা পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। যার ফলে এটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারি। নিয়মিত তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ  তরমুজের বীজ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ বেসিক এন্ড অ্যাপ্লাইড সাইন্সের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় তরমুজের বীজে রয়েছে ওমেগা-৬ ফ্যাটি আসিড। যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও ইরানি একটি গবেষণা থেকে জানা যায় যে তরমুজের বীজ গ্লাইকোজেন স্টোরগুলোর সংশ্লেষনের উপর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যেটিও ডায়াবেটিস মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা ডায়াবেটিস সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত তরমুজের বীজ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 

মিনারেলস সমৃদ্ধঃ  তরমুজের বীজে ম্যাগনেসিয়াম নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে ম্যাগনেসিয়াম নামক গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়াও এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট নামক উপাদান হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে তুলতে সাহায্য করে। তাছাড়াও তরমুজের বীজে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, জিঙ্ক, সোডিয়াম, ফসফরাস, আইরন সহ আরো নানা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই আপনারা এটি নিয়মিত খেতে পারেন।

ফ্যাট সমৃদ্ধঃ  আপনি যদি এক কাপ পরিমাণ শুকনো তরমুজের বীজ নেন, তাহলে সেখানে দেখতে পারবেন ৫১ গ্রামই ফ্যাট। আর এর মধ্যে ১১ শতাংশ দেখতে পাবেন স্যাচুরেটেড ফ্যাট। আর এতে বাকি যে ফ্যাটগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং এতে আরো রয়েছে ওমেগা ৬ ফ্যাটি আসিড। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতামত অনুযায়ী পলি এবং মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে থাকে।  অন্যদিকে ওমেগা ৬ ফ্যাটি আসিড উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে।

হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখতেঃ আপনি জানলে অবাক হবেন হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর চর্বির প্রয়োজন হয়। আর স্বাস্থ্যকর চর্বি প্রচুর পরিমাণে তরমুজের বীজে থাকে। নিয়মিত তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে হৃদযন্ত্রকে পাম্প করা সহজ হয়। এছাড়াও তরমুজের বীজ নিয়মিত খাওয়ার ফলে করোনারি ধমনী রোগ এবং হার্ট ফেইলিওরের এর মতো নানা হৃদরোগ জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।

আমিষের ভালো উৎসঃ  তরমুজের বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ রয়েছে। একজন মানুষের সারাদিনে যে পরিমাণ আমিষের প্রয়োজন হয় এক কাপ তরমুজের বীজে তার ৬০ শতাংশই পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে রয়েছে আর্গিনাইন নামক গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো এসিড। যেটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ  তরমুজের বীজে রয়েছে জিংক নামক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চীনা গবেষণা অনুযায়ী জিংক নামক গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি পুরুষদের শুক্রানুর মান উন্নত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও তরমুজের বীজ ম্যাঙ্গানিজের খুব ভালো উৎস। মেরিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টার এর মতামত অনুযায়ী তরমুজের বীজ পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা উন্নত করার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

হাড়কে মজবুত করতেঃ  তরমুজের বীজে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার থাকার কারণে এটি নিয়মিত খেলে শরীরের হাড় মজবুত থাকে। তাই আপনারা আপনাদের শরীরের হাড় মজবুত রাখার জন্য আপনাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় তরমুজের বীজ যোগ করতে পারেন।

ক্ষত নিরাময়েঃ  তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে শরীরের ক্ষত খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ভালো হয়ে থাকে। কেননা তরমুজের বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামিনো এসিড এল আরজিনাইন দেখতে পাওয়া যায়। গবেষকরা মনে করে থাকেন এল আরজিনাইন শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকে। আর এর কারণেই মূলত শরীরের কোথাও ক্ষত দেখা দিলে তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেরে যায়।

মস্তিষ্ককে সচল রাখেঃ  তরমুজের বীজে ম্যাগনেসিয়াম নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। এই উপাদানটি স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটনার পাশাপাশি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অনেক গবেষণায় দেখতে পাওয়া যায় শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি হলে স্মৃতিশক্তি অচল হয়ে পড়ে। আর এর ফলে অ্যালঝাইমারস বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই মস্তিষ্কের সার্বিক উন্নতির জন্য তরমুজের বীজ খেতে পারেন।

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করেঃ  তরমুজের বীজে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম। এই উপাদানটি হার্টের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একই সঙ্গে এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দূর করে। এছাড়াও তরমুজের বীজে রয়েছে সিটরুলিন নামক আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই উপাদানটি অ্যারোটিক ব্লাড প্রেসারকে কমিয়ে হার্টকে ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে। তাই যাদের পরিবারে হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস রয়েছে, তারা খাদ্য তালিকায় তরমুজের বীজ যুক্ত করে নিয়মিত খেতে পারেন। তাহলে এ ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করা যাবে।

গর্ভাবস্থায় তরমুজের বীজ খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় তরমুজের বীজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা তরমুজ খাওয়ার ফলে যেমন গর্ভকালীন সময়ে নানা উপকার হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলেও গর্ভকালীন সময়ে নানা উপকার সাধিত হয়ে থাকে। নিচের আলোচনায় গর্ভকালীন সময়ে তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে কি কি উপকার পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে আলোকপাত করা হলোঃ

গর্ভকালীন সময়ে মায়ের এবং শিশুর সঠিক পুষ্টির জন্য তরমুজের বীজ অত্যন্ত কার্যকরী। কেননা এতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, ফ্যাটি এসিড, খনিজ সহ নানা পুষ্টিকর উপাদান। গর্ভাবস্থায় একজন মা তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ প্রোটিন পাবে। যা তার পেশী, কোষের বৃদ্ধি এবং মেরামতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
 
এছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে একজন মা তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে শরীরে ভিটামিন বি পেয়ে থাকে। যা তার নবাগত শিশুর ত্বক, চোখ এবং শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও তরমুজের বীজে থাকা ম্যাগনেসিয়াম নামক উপাদান গর্ভবতী মায়ের স্নায়ুতন্ত্র এবং হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
 
তাছাড়াও তরমুজের বীজে থাকা পটাশিয়াম গর্ভবতী মায়ের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এমনকি তরমুজের বীজে রয়েছে আয়রন। যা গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়তা করে থাকে এবং অতিরিক্ত রক্ত উৎপন্ন করতেও সহায়তা করে। তাছাড়াও তরমুজের বীজে ক্যালরির মাত্রা খুব কম থাকে এবং এতে রয়েছে লৌহ, ফোলেট। যা গর্ভকালীন সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন         

গর্ভকালীন সময়ে তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে নানা উপকার যেমন হয় তেমন কিছু অপকারও হয়। বিশেষ করে এটি যখন অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় তখন পেট ব্যথা, গ্যাস, বদহজম ইত্যাদি নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাছাড়াও যে সকল মহিলাদের আগে থেকে তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে এলার্জি সমস্যা হয়, তাদের গর্ভকালীন সময়ে এই বীজ না খাওয়াই উত্তম হবে। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।

তরমুজের বীজ খাওয়ার নিয়ম

তরমুজের বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা তরমুজের বীজ খাওয়ার যাবতীয় নিয়ম গুলো আপনাদের সামনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।  
 
আমরা যখন তরমুজ খাই তখন অটোমেটিক তরমুজের সাথে এর বীজগুলো খেয়ে নিই। কিন্তু এভাবে না খেয়ে তরমুজের বীজগুলোকে অঙ্কুরিত করে খেলে সবচাইতে বেশি উপকার পাওয়া যাবে এমনটাই জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও আপনি চাইলে তরমুজ খাওয়ার পর এর বীজগুলোকে রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন তারপর খেতে পারেন। তাছাড়াও আপনারা তরমুজের বীজগুলোকে ভালোভাবে ভেজে এর সাথে জলপাইয়ের তেল, লবণ, দারুচিনি এবং হালকা চিনি মিস করে দিয়ে খেতে পারেন।
 
এভাবে খাওয়ার ফলেও ভালো উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়াও আপনার চাইলে তরমুজের বীজকে রান্না করেও খেতে পারেন। এছাড়াও তরমুজের বীজকে প্রথমে গুড়া করে নিয়ে এটি সালাদ কিংবা অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিস করে দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটি নিয়মিত ৩০ গ্রাম পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে বা এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে তরমুজের বীজের উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় তরমুজের বীজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেও বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন। 

তরমুজের বীজের অপকারিতা

তরমুজের বীজের অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা তরমুজের বীজের যাবতীয় অপকারিতা গুলো আপনাদের সামনে নিখুঁতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। 
  • যেহেতু তরমুজের বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই এটি বেশি পরিমাণে খাওয়া কখনোই ঠিক হবে না। এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পেটের নানা সমস্যা তৈরি হতে দেখা যায়। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গ্যাস, পেট ব্যথা, এসিডিটি, বমি বমি ভাব ইত্যাদি। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই হজমের সমস্যা রয়েছে, তারা তরমুজের বীজ পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে এ ধরনের সমস্যা হবে না।
  • যে সকল ব্যক্তিদের পাকস্থলীতে সমস্যা রয়েছে, যেমন অনিয়ত মলত্যাগ তাদের তরমুজের বীজ না খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ। যা এ ধরনের সমস্যার জন্য দায়ী।
  • তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে কারো কারো ক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর এলার্জির সমস্যা তৈরি হলে শ্বাসকষ্ট, চুলকানি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি নানা জটিল সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে যাদের এলার্জির সমস্যা তৈরি হবে তারা এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন 
  • যে সকল ব্যক্তিরা কিডনি রোগে আক্রান্ত রয়েছেন, তাদের তরমুজের বীজ না খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। কেননা তরমুজের বীজে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। তাই কিডনি আক্রান্ত রোগীরা তরমুজের বীজ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
  • তরমুজের বীজ অধিক পরিমাণে খাওয়া ঠিক নয়। অধিক পরিমাণে খেলে দেহে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি গর্ভবতী মায়ের জন্যও ক্ষতিকর। তাই পরিমাণ মতো তরমুজের বীজ খাওয়া প্রয়োজন। দিনে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ৩০ গ্রাম তরমুজের বীজ খাওয়া নিরাপদ।

তরমুজের বীজের দাম

তরমুজের বীজের দাম সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা তরমুজের বীজের দাম কেমন হতে পারে তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
 
তরমুজের-বীজের-দামতরমুজের বীজের দাম একেক জায়গায় একেক রকম হয়ে থাকে। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে বিক্রেতা, জায়গা এবং কাস্টমারের দামাদামির ওপর। আর তরমুজের বীজ বিভিন্নভাবে পাওয়া যায়। এই বীজ ৫০ টাকার প্যাকেট থেকে শুরু করে ১০০০ টাকার প্যাকেট পর্যন্ত পাওয়া যায়। তরমুজের বীজ বাজারের বড় বড় মুদির দোকানগুলোতে পাওয়া যেতে পারে।
 
এছাড়াও এটি অনলাইনের বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া যেতে পারে। তেমন একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের নাম হলো পিওর স্টোর। এই ওয়েবসাইটে প্রতি ৫০০ গ্রাম তরমুজ বীজের দাম ৬৫০ টাকা করে এবং ১ কেজি তরমুজ বীজের দাম ১৩০০ টাকা করে। এছাড়াও আরও একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ মিষ্টি কুমড়ার বিচির ১৩টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন    

যেটির নাম হলো কৃষি বাজার লিমিটেড। এই ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে আপনি ৫৭ টাকা থেকে শুরু করে ২৬০০ টাকার মধ্যে তরমুজের বীজের বিভিন্ন জাতের উপর নির্ভর করে বীজ ক্রয় করতে পারেন। তরমুজ বীজের দাম সাধারণত এরকমই হয়ে থাকে। আপনার নিকটস্থ কোনো দোকানে বা অনলাইন বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে দেখে শুনে ক্রয় করতে পারেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।

তরমুজের বীজ সংরক্ষণের উপায়

তরমুজের বীজ সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা তরমুজের বীজ কিভাবে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে খাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
  • তরমুজের বীজ সংরক্ষণের জন্য এমন স্থান বেছে নিতে হবে যেখানে সূর্যের আলো সরাসরি পড়ে না এবং সেই জায়গায় ২০° সেলসিয়াসের নিচে অবস্থান করে। কেননা তরমুজের বীজ শুষ্ক এবং ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করার প্রয়োজন হয়। আপনারা চাইলে এমন কিছু পাত্রে তরমুজের বীজ সংরক্ষণ করতে পারেন যে সকল পাত্রের ভেতর কোন ধরনের বায়ু প্রবেশ করবে না।
  • তরমুজের বীজ দীর্ঘদিন যাবত ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা যায়। আপনারা চাইলে এটিকে ফ্রিজে রাখার আগে বায়ু প্রবেশ করতে পারে না এমন কোন জিপলক ব্যাগে অথবা বায়ু প্রবেশ করতে পারে না এমন কোন কন্টেইনারে রেখে ফ্রিজে রাখতে পারেন। তারপর দীর্ঘদিন যাবত ধরে সংরক্ষণ করে খেতে পারেন।
  • তরমুজের বীজ সংরক্ষণ এর আগে অবশ্যই এটি দেখে নিতে হবে যে এটি ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে গেছে কিনা। ভালোভাবে রোদে শুকালে তারপর সংরক্ষণ করা যায়। এভাবে সংরক্ষণ করলে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস তরমুজের বীজে আক্রমণ করতে পারে না। 

ত্বকের যত্নে উপকারী তরমুজের বীজ

ত্বকের যত্নে উপকারী তরমুজের বীজ। এই সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা তরমুজের বীজ ত্বকের যত্নেও দুর্দান্ত কাজ করে থাকে। আজকের এই পর্বে আমরা ত্বকের যত্নে তরমুজের বীজের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

ব্রণ দূর করতেঃ  তরমুজের বীজ ত্বকের যাবতীয় ব্রণ দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা তরমুজের বীজে রয়েছে লিনোলিক এসিড। যা ত্বকের ব্রণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে থাকে।

ত্বকের দাগ দূরীকরণেঃ  অনেক সময় ত্বকে নানা ধরনের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। আপনি যদি এ সকল দাগ দূর করতে চান, তাহলে নির্দ্বিধায় তরমুজের বীজের ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তরমুজের বীজের ফেসপ্যাক ত্বককে হালকা করে ত্বকের যাবতীয় দাগ দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ত্বকের প্রদাহ কমায়ঃ  ত্বক অনেক সময় রোদে পোড়ার মতো জ্বালাপোড়া করতে পারে। যার কারণে
ত্বকে চুলকানি, লালভাব দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য তরমুজের বীজ কাজ করে থাকে। কেননা এতে রয়েছে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য।

আরো পড়ুনঃ মৌরি খাওয়ার ১৯টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন    

ত্বককে হাইড্রেশন রাখেঃ  তরমুজের বীজে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি। যা ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। পাশাপাশি এটি ত্বকের শুষ্কতা এবং নিস্তেজতা দূর করতে কাজ করে থাকে। এর প্রাকৃতিক হাইড্রেশন ত্বককে নরম এবং উজ্জ্বলময় করে তোলে।

ত্বকের যত্নে তরমুজের বীজ কিভাবে খাবেন এবং কাজে লাগাবেনঃ

ভাজা বীজঃ  তরমুজের বীজ প্রথমে রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন। তারপর এটিকে সোনালী কালার আসা পর্যন্ত ভালোভাবে ভেজে নিবেন। এরপর এটিকে সালাদ কিংবা অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিস করে খেয়ে নিতে পারেন। এভাবে খাওয়ার ফলেও ত্বকের যাবতীয় উপকার সাধিত হয়ে থাকবে।

ফেসপ্যাক তৈরিঃ  এজন্য প্রথমে তরমুজের বীজ নিয়ে নিবেন। তারপর এগুলোকে ভালোভাবে গুঁড়ো করে এর সাথে দই বা মধু মিশিয়ে নিবেন। তারপর ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে আপনার ত্বকে লাগাবেন। ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এটি ব্যবহারে ত্বক নরম, মসৃণ এবং উজ্জ্বলময় হয়ে উঠবে।

চুলের যত্নে তরমুজের বীজের গুনাগুন

চুলের যত্নে তরমুজের বীজের গুনাগুন সম্পর্কে আপনাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা তরমুজের বীজ চুলের যত্নে ব্যাপক ভালো কাজ করে থাকে। আজকের এই পর্বে তাই চুলের যত্নে তরমুজের বীজের যাবতীয় গুণমন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
 
চুলের-যত্নে-তরমুজের-বীজের-গুনাগুনচুল মজবুত করেঃ  তরমুজ বীজের তেল চুলের ভাঙ্গা প্রতিরোধ করে এবং একই সঙ্গে এটি চুলের গঠন বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা তরমুজের বীজের তেলে রয়েছে লিলোনিক এসিড সহ আরো নানা প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড। তরমুজের বীজের তেল চুলে নিয়মিত ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যকর চুল পাওয়া সম্ভব হয়।
মাথার ত্বকে পুষ্টি যোগাইঃ  তরমুজের বীজের তেল মাথার ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক ভিতর থেকে পুষ্টি পায়। যার কারণে মাথার ত্বকে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়। আর এর কারণেই মূলত চুলের সুস্থ বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়ে থাকে। তাই আপনারা তরমুজের বীজের তেল মাথার স্কাল্পে ব্যবহার করতে পারেন।

ক্ষতিগ্রস্ত চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনেঃ  রাসায়নিক পদার্থ, তাপ কিংবা নানা পরিবেশের কারণে চুল অনেক সময় অনেক বেসি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। চুলের এ সকল ক্ষতি পুনরুদ্ধার করতে তরমুজের বীজের তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি চুলের ক্ষতিগ্রস্ত উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

চুলের কোঁকড়ানো রোধ করেঃ  তরমুজের বীজের তেল চুলকে ভালোভাবে পুষ্টি জোগাতে পারে। একই সঙ্গে এটি চুলকে নরম করে চুলের কোঁকড়ানো ভাব প্রতিরোধ করে এবং চুলকে মসৃণ করে তোলে।

আরো পড়ুনঃ কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার ১৯টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন  

চুলকে চকচকে করতেঃ  চুলকে ঝলমলে করে তুলতে নিয়মিত তরমুজের বীজের হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে চুলের সামগ্রিক চেহারা পরিবর্তন হয়ে চুল আরো বেশি চকচকে হয়ে ওঠে।

চুলের হেয়ার মাস্ক তৈরির পদ্ধতিঃ

চুলের হেয়ার মাস্ক তৈরির জন্য প্রথমে কয়েক টুকরো তরমুজ নিন। এরপর ১ চামচ তরমুজের বীজ নিয়ে এই দুইটি উপকরণকে একসঙ্গে কাটা চামচের মাধ্যমে ভালোভাবে চোটকে নিয়ে এর সাথে ১ চামচ দই মিস করে হেয়ার মাস্ক তৈরি করে নিন। এরপর এই হেয়ার মাস্কটি ত্বক ও চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে দিয়ে আধা ঘন্টার মতো অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলবেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।

তরমুজের বীজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ দিনে কয়টি তরমুজের বীজ খাওয়া উচিত?

উত্তরঃ তরমুজের বীজ স্বাস্থ্যের পক্ষে নানা গুণাগুণ বয়ে আনে। এটি দিনে ১৫ থেকে ৩০ গ্রাম খাওয়া উচিত। এর থেকে বেশি না খাওয়াই উত্তম। অতিরিক্ত খেলে পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, গ্যাস সহ নানা পেটের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

প্রশ্নঃ তরমুজের বীজ না ভিজিয়ে খাওয়া যাবে কি?

উত্তরঃ না, তরমুজের বীজ না ভিজিয়ে একদমই খাওয়া যাবেনা। কেননা এতে রয়েছে নানা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিংক, আইরন ইত্যাদি। তরমুজের বীজ কাঁচা খেলে এটি শরীরে শোষিত হয় না। এছাড়াও এটি ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে ফাইটিক এসিড ধুয়ে যায়। তাই তরমুজের বীজ রাতে ভিজিয়ে খাওয়া সবচাইতে উত্তম হবে।

প্রশ্নঃ তরমুজের বীজের তেল কি ক্ষতিকর?

উত্তরঃ না, তরমুজের বীজের তেল ক্ষতিকর নয়। তরমুজের বীজের তেলে রয়েছে ওমেগা ৩, ওমেগা ৬ এবং ওমেগা ৯ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, সুস্থ ত্বক পেতে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে ভালো রাখতে দুর্দান্ত কাজ করে থাকে।

লেখকের শেষ কথা 

উপরের আলোচনা থেকে আমরা তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এসেছি। আমরা আরো জানতে সক্ষম হয়েছি গর্ভাবস্থায় তরমুজের বীজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেও। আমাদের সাধারণত বাসাবাড়ির জন্য যখন বাজার থেকে তরমুজ কিনে আনে তখন এর ভিতরের অংশটুকু খেয়ে নিয়ে বীজগুলো ফেলে দেই। যা মোটেও ভালো কথা নয়। কেননা তরমুজের মতো এর বীজগুলোতেও ভালো পরিমাণে নানা পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
 
যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। আমি উপরের আলোচনায় তরমুজের বীজের যাবতীয় ভালো দিকগুলো এবং একই সঙ্গে এর খারাপ ঠিক গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি আমি তরমুজের বীজ কিভাবে খেলে এর সম্পূর্ণ উপকারিতা পাওয়া যাবে তাও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনারা যদি উপরের আলোচনাটি পড়ে থাকেন। তাহলে তরমুজের বীজের যাবতীয় গুনাগুন বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রিটেক্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url