বিলম্ব ফলের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জেনে নেওয়া
প্রয়োজন। কেননা বিলম্ব ফলের বেশ কিছু ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। যেগুলো আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে নিচের
দেওয়া লেখাগুলো খুব যত্ন সহকারে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই মূলত আপনারা
বিলম্ব ফলের যাবতীয় গুনাগুন গুলো বিস্তারিত জেনে যেতে পারবেন।
সূচিপত্রঃ বিলম্ব ফলের যাবতীয় গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে
আমরা বিলম্ব ফলের যাবতীয় ভালো দিকগুলো এবং খারাপ দিকগুলো আপনাদের ধনের তুলে ধরার
চেষ্টা করবো। বিলম্ব ফল সাধারণত কামরাঙ্গা ফলের মতো হয়ে থাকে। যার কারণে অনেকেই
এটিকে কামরাঙ্গা ভেবে ভুল করে। তাছাড়াও এই ফলের স্বাদ অনেকটা কামরাঙ্গা ফলের
মতোই। এই সবুজ রসালো ও মুখরোচক সবুজ ফলটি কামরাঙ্গা গোত্রের ফল বলে জানা গেছে।
এই ফলটি সম্পর্কে জানা যায় এটি শুধু স্বাদ নয় বরং পরিবার, বিন্যাস, প্রজাতি, গুণ
সবকিছুতেই কামরাঙ্গার গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এই ফলটি টক স্বাদের হয়ে থাকে। আবার
এই ফলটিকে দেখতে পটলের মতোও দেখায়। এই ফলটি আকারে তিন থেকে ছয় সেন্টিমিটার
পর্যন্ত হতে দেখা যায়। তাছাড়াও বিলম্ব ফলের নানা ওষধি গুনাগুন রয়েছে। নিচের
আলোচনায় আমরা বিলম্ব ফলের যাবতীয় উপকারিতা গুলো এবং অপকারিতা গুলো দেখে নেওয়ার
চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক।
বিলম্ব ফলের উপকারিতা
বিলম্ব ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেও। আজকের এই পর্বে আমরা
বিলম্ব ফলের যাবতীয় উপকারিতা গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। চলুন
তাহলে দেখে নেওয়া যাক। বিলম্ব ফল নানা গুণে ভরপুর। তাই চলুন এক নজরে সেগুলো দেখে
আসি।
- বিলম্ব ফলের পাতা চুলকানি নিরাময় করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এই ফলের পাতা বেটে গায়ে লাগালে চুলকানি নিরাময় হয়ে থাকে। তাই আপনারা চুলকানি নিরাময় করতে বিলম্ব ফলের পাতাকে কাজে লাগাতে পারেন।
- বিলম্ব গাছের ফল নিয়মিত খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে। তাই আপনারা উচ্চচাপ ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে নিয়মিত বিলম্ব গাছের ফল খেতে পারেন।
- সর্দি ও কাশি নিরাময়ে বিলম্ব গাছের ফুল বেশ ভালো কাজ করে থাকে। এজন্য আপনারা গরম পানির সঙ্গে বিলম্ব গাছের ফুলকে জাল দিবেন। তারপর সেই পানি নিয়মিত সেবন করবেন। তাহলে আপনাদের সর্দি কাশি ভালো হয়ে যাবে।
- কোন বিষধর প্রাণী যদি শরীরে কামড় দিয়ে থাকে, তাহলে সেই কামোড় থেকে নিরাময়ের জন্য বিলম্ব গাছের পাতা ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে। তাই আপনারা কোন বিষধর প্রাণীর কামড়ের জায়গায় বিলম্ব গাছের পাতা ব্যবহার করবেন।
- আপনাদের যদি চুলকানি, ফোলা, বাত, মাম্পস বা চামড়া ফাটার অবস্থা তৈরি হয়, তাহলে আপনারা বিলম্ব পাতাকে পেস্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
- বিলম্ব ফল হজমে সহায়তা করে থাকে। বিলম্ব ফল টক জাতীয় ফল হওয়ার কারণে এটি পাচনক্রিয়ায় সহায়তা করে থাকে। একই সঙ্গে এটি পেট পরিষ্কার রাখতে ভূমিকা পালন করে থাকে।
- যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা বিলম্ব ফল খেতে পারেন। কেননা এটি রক্তের সুপার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে। যার কারণে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ হয়ে থাকে।
- যারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তারা বিলম্ব ফল খেতে পারেন। এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- ত্বকে অনেক সময় নানা ধরনের দাগ থাকে। সেই দাগ দূর করতে বিলম্ব ফলের রস ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের দাগ দূর করতে সহায়তা করে থাকে। একই সঙ্গে এটি মাথার খুশকি সমস্যা দূর করতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
- বিলম্ব ফল খাওয়ার ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয় না এবং সেই সাথে এটি মেটাবলিজম বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিলম্ব ফল খেতে পারেন।
বিলম্ব ফলের অপকারিতা
বিলম্ব ফলের অপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা এই ফল
খাওয়ার ফলে যেমন নানা উপকার হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি এই ফল খাওয়ার ফলে বেশ কিছু
ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে। নিচের আলোচনায় বিলম্ব ফলের যাবতীয় ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে
ধরা হলো। সাধারণত বিলম্ব ফল খাওয়ার ফলে অপকারের তুলনায় উপকার বেশি হয়।
বিলম্ব ফল কখনো অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া উচিত নয়। কারণ এটি অতিরিক্ত পরিমাণে
খেলে এতে থাকা ক্যালসিয়াম অক্সলেট আপনার কিডনি নষ্ট করে দিতে পারে। কিংবা বিকল
করে দিতে পারে। তাই এই ফলটি পরিমাণ মতো খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। শুধু বিলম্ব
ফলের ক্ষেত্রে নয় যেকোনো ফল খাওয়ার আগে সেই ফল সম্পর্কে জেনে খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ তরমুজের ১৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
আর কোন ফলেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। এই অপকারটি ছাড়া বিলম্ব ফলের
আর তেমন অপকারিতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। আশা করি আপনারা বিলম্ব ফল খাওয়ার সময়
পরিমাণমতো খাবেন। তাহলেই এর যাবতীয় উপকারিতা গুলো পেয়ে যাবেন।
বিলম্ব ফল কিভাবে খায়
বিলম্ব ফল কিভাবে খায় এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা
বিলম্ব ফল কিভাবে খাওয়া যেতে পারে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা
করবো। চলুন তাহলে তা জেনে নেওয়া যাক। মূলত বিলম্ব ফল নানাভাবে খাওয়া যেতে পারে।
আপনারা চাইলে এটিকে বড় বা ছোট মাছের মাথা দিয়ে রান্না করে খেতে পারেন।
এভাবে খাওয়ার ফলে বেশ ভালো সুস্বাদু স্বাদ পাবেন। এছাড়াও আপনারা মাছের ডিম
দিয়ে এই ফল রান্না করে খেতে পারেন। এভাবে খেলেও বেশ ভালো স্বাদ পাওয়া যায়।
তাছাড়াও আপনারা চাইলে বিলম্ব ফল ডাল ও মাংসতেও ব্যবহার করে খেতে পারেন। তাছাড়াও
আপনারা চাইলে বিলম্ব ফলের রস সরাসরি খেতে পারেন। বিলম্ব ফলের রস খাওয়ার ফলে
সর্দি কাশি সমস্যা থাকলে দূর হয়ে যায়। তাছাড়াও বিলম্ব আপনারা কাঁচাও খেতে
পারবেন।
আরো পড়ুনঃ আঙ্গুরের ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন
ঝাল এবং লবণ একসাথে মিশিয়ে দিয়ে বিলম্ব ফল খেতে দারুন মজা লাগে। এছাড়াও আপনারা
বিলম্ব ফল দিয়ে আচার বা চাটনি তৈরি করে খেতে পারেন। অনেকে আবার খাবারে টকভাব
আনার জন্য বিলম্ব ফলকে তাদের খাবারে ব্যবহার করে থাকে। আপনারা চাইলে খাবারকে
হালকা টক যুক্ত করার জন্য বিলম্ব ফল ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে আপনারা বিলম্ব ফল
খেতে পারেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনার থেকে বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।
বিলম্ব ফলের পুষ্টিগুণ
বিলম্ব ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা
বিলম্ব ফল নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। বিলম্ব ফল খাওয়ার ফলে অপকারের বদলে উপকার
বেশি হয়ে থাকে। কারণ এখানে নানা পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যেগুলো আমাদের শরীরের
জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আজকের এই পর্বে আমরা বিলম্ব
ফলের নানা পুষ্টিগুণ গুলো জেনে নিবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
প্রতি ১০০ গ্রাম বিলম্ব ফলে
থায়ামিন রয়েছে ০.০১০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস রয়েছে ১১.১ মিলিগ্রাম,
ক্যালসিয়াম রয়েছে ৩.৪ মিলিগ্রাম, আর্দ্রতা রয়েছে ৯৪.২-৯৪.৭ গ্রাম, আমিষ রয়েছে
০.৬১ গ্রাম, তন্তু রয়েছে ০.৬ গ্রাম, লৌহ রয়েছে ১.০১ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন
রয়েছে ০.০৩৫ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন রয়েছে ০.০২৬ মিলিগ্রাম।
বিলম্ব ফল কোথায় পাওয়া যায়
বিলম্ব ফল কোথায় পাওয়া যায় এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের
এই পর্বে আমরা বিলম্ব ফল কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত
ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। বাংলাদেশের বেশ
কিছু টক জাতীয় ফল পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে বিলম্ব একটি। দেশের কিছু
কিছু এলাকায় এই ফলের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।
বিশেষ করে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলায়
বিলম্ব ফল ব্যাপক পরিচিত। সাধারণভাবে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বিলম্ব ফল
খুব একটা পরিচিত নয়। যার কারণে রাজধানী ঢাকার বাজারে এবং দেশের উত্তর
পশ্চিম অঞ্চলে বিলম্ব ফল কোনমতেই দেখতে পাওয়া যায় না। তবে বৃহত্তর
সিলেট এবং চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা এলাকায় বাড়ির আঙ্গিনা বা উঠোনের কোণে
বিলম্ব ফলের গাছ দেখতে পাওয়া যায়।
সেই গাছ থেকেই তারা প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিলম্ব প্রতিনিয়ত উত্তোলন
করে থাকে এবং পরিবারের চাহিদা পূরণ করে থাকে। উইকিপিডিয়ার এক সূত্র
থেকে জানা গেছে যে বিলম্ব ফলের উৎপত্তি ব্রাজিলে এবং পরে তা দক্ষিণ
এসিয়ায় ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এর আদি নিবাস ইন্দোনেশিয়াতে।
তাছাড়াও ভারতে বিলম্ব ফলের উৎপাদন হয়ে থাকে। ভারতীয় অঞ্চল
নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া হাওয়ায় এই ফল এখানে উৎপন্ন হয়।
বিশেষ করে ভারতের মহারাষ্ট্র, কেরালা, তামিলনাড়ু, গোয়ায়
বিলম্ব ফল ব্যাপক জনপ্রিয়। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া
ও শ্রীলঙ্কায় বিলম্ব ফল দেখতে পাওয়া যায়। তাছাড়াও এশিয়া
মহাদেশের বাইরে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় বিলম্ব ফল আপনারা
দেখতে পাবেন। আশা করছি আপনারা বিলম্ব ফল কোথায় পাওয়া যায় সে
সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনার
থেকে বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে
আসতে পারেন।
বিলম্ব ফল কোথায় পাওয়া যায় এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের
এই পর্বে আমরা বিলম্ব ফল কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত
ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। বাংলাদেশের বেশ
কিছু টক জাতীয় ফল পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে বিলম্ব একটি। দেশের কিছু
কিছু এলাকায় এই ফলের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।
বিশেষ করে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলায়
বিলম্ব ফল ব্যাপক পরিচিত। সাধারণভাবে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বিলম্ব ফল
খুব একটা পরিচিত নয়। যার কারণে রাজধানী ঢাকার বাজারে এবং দেশের উত্তর
পশ্চিম অঞ্চলে বিলম্ব ফল কোনমতেই দেখতে পাওয়া যায় না। তবে বৃহত্তর
সিলেট এবং চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা এলাকায় বাড়ির আঙ্গিনা বা উঠোনের কোণে
বিলম্ব ফলের গাছ দেখতে পাওয়া যায়।
সেই গাছ থেকেই তারা প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিলম্ব প্রতিনিয়ত উত্তোলন
করে থাকে এবং পরিবারের চাহিদা পূরণ করে থাকে। উইকিপিডিয়ার এক সূত্র
থেকে জানা গেছে যে বিলম্ব ফলের উৎপত্তি ব্রাজিলে এবং পরে তা দক্ষিণ
এসিয়ায় ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এর আদি নিবাস ইন্দোনেশিয়াতে।
তাছাড়াও ভারতে বিলম্ব ফলের উৎপাদন হয়ে থাকে। ভারতীয় অঞ্চল
নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া হাওয়ায় এই ফল এখানে উৎপন্ন হয়।
বিশেষ করে ভারতের মহারাষ্ট্র, কেরালা, তামিলনাড়ু, গোয়ায়
বিলম্ব ফল ব্যাপক জনপ্রিয়। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া
ও শ্রীলঙ্কায় বিলম্ব ফল দেখতে পাওয়া যায়। তাছাড়াও এশিয়া
মহাদেশের বাইরে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় বিলম্ব ফল আপনারা
দেখতে পাবেন। আশা করছি আপনারা বিলম্ব ফল কোথায় পাওয়া যায় সে
সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনার
থেকে বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে
আসতে পারেন।
বিলম্ব ফলের আচার
বিলম্ব ফলের আচার সম্পর্কে আপনাদের জেনে নেওয়া উচিত। কেননা বিলম্ব ফলকে
ব্যবহার করে খুব সহজে আচার তৈরি করা যায়। তাই আজকের এই পর্বে আমরা বিলম্ব ফলের
আচার কিভাবে তৈরি করতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। সাধারণত বিলম্ব ফলকে ব্যবহার করে টক, ঝাল,
মিষ্টি আচার তৈরি করা যায়।
তাই আপনি যদি বিলম্ব ফলের আচার তৈরি করতে চান, তাহলে আপনার বেশ কিছু উপকরণ
লাগবে। উপকরণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এক কেজি বিলম্বের সাথে দুইটা চামচ রসুন
বাটা, দুইটা চামচ সরিষা বাটা, দুই থেকে তিন কাপ সরিষার তেল, আদা বাটা তিন চামচ,
বোম্বাই মরিচ কুচি করে এক চামচ, জিরা বাটা ৩ থেকে চার চামচ।
তাছাড়াও আরো প্রয়োজন পড়বে পরিমাণ মতো লবণ এবং সিরকা এক চামচ, পাঁচফোড়ন
গুড়া এক চামচ, চিনি ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম। এই উপকরণগুলো প্রস্তুত করে প্রথমে
সরিষার তেল একটি পাত্রে ভালোভাবে গরম করে নিতে হবে। তারপর সরিষা বাটা এবং রসুন,
জিরা ও আদা বাটা কিছুক্ষণ এতে দিয়ে নাড়তে থাকতে হবে। তারপর বিলম্ব ফলকে
অর্ধেক করে কেটে নিয়ে এতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর ভালোভাবে নাড়তে হবে।
কিছুক্ষন নেড়ে নেওয়ার পর বিলম্ব ফল সিদ্ধ হয়ে যাবে। সিদ্ধ হওয়ার পরে নামিয়ে
নিতে হবে। এরপর পাঁচফোড়ন গুড়া সিদ্ধ টুকরা করা বিলম্ব ফলের উপর দিতে হবে এবং
তারপর সেই টুকরো করা বিলম্ব ফল গুলো এবং পাঁচফোড়ন একসঙ্গে ভালোভাবে মিশ্রিত
করতে হবে। কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত রোদে আচারটি শুকাতে দিতে হবে।
এতে আচারের মান ভালো হবে এবং সেই সাথে অনেক সুস্বাদু হবে। দুই থেকে তিন দিন ধরে
শুকানোর পর আঁচারটি শুকিয়ে গেলে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। এছাড়াও
আপনারা চাইলে উপরের আলোচনার থেকে বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং বিলম্ব
ফল কিভাবে খায় এই সম্পর্কেও বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।
বিলম্ব ফলের গাছ লাগানোর নিয়ম
বিলম্ব ফলের গাছ লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে আপনারা জেনে নিতে পারেন। বিলম্ব ফল
যেহেতু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তাই এই ফলের গাছ কিভাবে লাগাতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। চলুন
আজকের এই পর্বে আমরা ধাপে ধাপে বিলম্ব গাছ লাগানোর যাবতীয় কৌশল জেনে নেবো।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
জমি নির্বাচনঃ
বিলম্ব গাছ লাগানোর জন্য প্রথমে জমি নির্বাচন করতে হবে। বিলম্ব গাছ লাগানোর জন্য
উঁচু ও পানি নিষ্কাশনযুক্ত জমি বেশি উপযোগী। তাই এমন ধরনের জমি প্রথমে নির্বাচন
করতে হবে। তাছাড়াও রোদযুক্ত উন্মুক্ত স্থানে বিলম্ব গাছ লাগানোর চেষ্টা করতে
হবে। তাহলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
চারা প্রস্তুতি ও রোপনঃ
বিলম্ব গাছ মূলত গুটি কলম বা বীজ থেকে তৈরি করা হয়। এছাড়াও যে কোন সময় বিলম্ব
গাছ লাগানো যায়। এটি বলতে গেলে এই গাছের একটি ভালো গুনাগুন। তবে বিলম্ব গাছ
লাগানোর পর এই গাছে নিয়মিত পানি দিতে হবে। বিলম্ব গাছ আপনারা চাইলে টবে বা মাঠে
লাগাতে পারেন। বিলম্ব গাছ লাগানোর সময় মাটির গর্তের আকার প্রায় ১ফুট গভীর ও ১
ফুট প্রশস্ত গর্ত হতে হবে। এভাবে বিলম্ব গাছের চারা প্রস্তুত ও রোপন করতে হবে।
মাটি প্রস্তুতঃ
গাছ লাগানোর জন্য প্রথমে মাটি প্রস্তুত করতে হবে। এজন্য বিলম্ব গাছ লাগানোর জন্য
যে গর্ত তৈরি করা হবে। সেই গর্তে ১ থেকে ২ কেজি গবর সার, ছাই ও কিছুটা বালু
মিশিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। এভাবে বিলম্ব গাছ লাগানোর জন্য মাটি প্রস্তুত
করতে হবে।
চারা রোপনঃ
বিলম্ব গাছের জন্য চারা রোপনের পর চারপাশের মাটি ভালোভাবে চেপে দিতে হবে। যাতে
পানি আটকে না থাকে। এভাবে আপনারা বিলম্ব গাছের চারা রোপন করতে পারেন। তাহলে ভালো
ফলন পেতে পারবেন।
বিলম্ব গাছের পরিচর্যা
বিলম্ব গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা
বিলম্ব গাছ লাগানোর পরে এর সঠিক পরিচর্যা না করা হলে এখান থেকে ভালো ফলন পাওয়া
যায় না। তাই বিলম্ব গাছ লাগানোর পরে এর সঠিক পরিচর্যা করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। তাই আজকের এই পর্বে আমরা বিলম্ব গাছের কিভাবে পরিচর্যা করা যায় সেই
সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
সেচ ব্যবস্থাঃ
বিলম্ব গাছ লাগানোর পর ছোট থাকা অবস্থায় নিয়মিত এই গাছে পানি দিতে হবে। তারপর
যখন এই গাছ বড় হবে তখন প্রাকৃতিক বৃষ্টির পানি যথেষ্ট। তখন আর নিয়মিত পানি দিতে
হবে না। তবে দীর্ঘ সময় ধরে যদি পানি না হয়, তাহলে সেই সময় গাছে পানি দিতে হবে।
এভাবে বিলম্ব গাছে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সার দেওয়াঃ
গাছে সাধারণত বছরে দুইবার স্যার প্রয়োগ করতে হবে। একবার হচ্ছে বর্ষাকালে এবং
আরেকবার হচ্ছে শীতকালে। এই সময়ে গোবর সার ও জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। তাহলে
ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
রোগবালাই ও প্রতিকারঃ
বিলম্ব গাছ সাধারণত খুব একটা রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হয় না। তবে এর পাতা মোচড়ানো
বা ছত্রাক হলে এতে জৈব ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। এভাবে বিলম্ব গাছের রোগ
বালাই দূর করতে হবে।
ছাঁটাইঃ
বিলম্ব গাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়ার জন্য এই গাছের ডালপালা ছাঁটাই করে ফেলতে হবে।
বিলম্ব গাছের ডালপালা ছাঁটাই করা হলে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা হবে।
যা ভালো ফলন হতে সহায়তা করে এবং গাছের জন্য অনেক উপকারী ভূমিকা রাখে।
বিলম্ব গাছ থেকে ফল সংগ্রহ
বিলম্ব গাছ থেকে ফল সংগ্রহ সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
আজকের এই পর্বে আমরা বিলম্ব গাছ থেকে কোন সময় ফল সংগ্রহ করতে হয়? কিভাবে করতে
হয়? তা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া
যাক। সাধারণত বিলম্ব গাছ লাগানোর দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই ফল আসতে শুরু করে।
এছাড়াও সাধারণত বিলম্ব গাছ বছরে বেশ কয়েকবার ফল দিয়ে থাকে। সবচাইতে মজার
ব্যাপার হলো বিলম্ব গাছের ফল কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায়।
এছাড়াও এটিকে রান্না করেও খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়াও আপনারা চাইলে বিলম্ব
ফলকে আচার, চাটনি হিসেবেও খেতে পারেন। তাছাড়াও বিলম্ব গাছের ফল ভেষজ ওষুধ
তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মূলত বিলম্ব গাছের ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
নানা উপকার বয়ে আনে। তাই আপনারা চাইলে বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে উপরের আলোচনা থেকে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।
লেখকের শেষ কথা
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
জেনে এসেছি। সেই সাথে আমরা বিলম্ব ফল কিভাবে খায় এই সম্পর্কেও বিস্তারিত জেনেছি।
বিলম্ব ফল টক জাতীয় ফল। এই ফলটি সব জায়গাতে বা সব এলাকায় পাওয়া যায় না। এটি
মূলত সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম অঞ্চলগুলোতে পাওয়া
যায়। এই ফলটি দেখতে অনেকটা কামরাঙ্গা ফলের মতো হয়ে থাকে।
আবার পটলের আকার ধারণ করে থাকে। এই ফলটি খাওয়ার ফলে শরীরের নানা উপকার হয়ে
থাকে। তাই উপরের আলোচনায় আমি বিলম্ব ফলের যাবতীয় উপকারিতা গুলো এবং অপকারিতা
গুলো বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। সেই সাথে বিলম্ব ফল কিভাবে খেতে হয়,
চাষ করতে হয় এবং পরিচর্যা করতে হয় সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোকপাত করার চেষ্টা
করেছি। আশা করছি আপনারা যদি উপরের আলোচনাটি ভালোভাবে পড়তে পারেন, তাহলে অবশ্যই
বিলম্ব ফলের যাবতীয় গুনাগুন গুলো বিস্তারিত জানতে পারবেন। এতে আপনাদের উপকার
হবে।
রিটেক্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url