ঢেঁড়সের ১৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জানলে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। কেননা ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের নানা উপকারিতা সাধিত হয়ে থাকে। তাই এর গুনাগুন সম্পর্কে আপনাদের জেনে নেওয়া উচিত।

ঢেঁড়সের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে নিচের দেওয়া লেখাগুলো খুব যত্ন সহকারে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই মূলত আপনারা ঢেঁড়সের যাবতীয় গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।

সূচিপত্রঃ ঢেঁড়সের যাবতীয় গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন   


ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা

ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ঢেঁড়সের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। ঢেঁরস খাওয়ার ফলে যেমন নানা ধরনের উপকার হয়ে থাকে ঠিক তেমনি এটি খাওয়ার ফলে বেশ কিছু ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই ঢেঁড়স কিভাবে খেলে এর সম্ভাব্য উপকারিতা গুলো পাওয়া যাবে এবং কিভাবে খেলে অপকারিতা হবে তার সবকিছুই আজকের এই পর্বে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক।

ঢেঁড়সের এর উপকারিতা গুলোঃ

লিভার সুস্থ রাখে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে লিভারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং লিভারকে পরিষ্কার রাখতে এটি সহায়তা করে থাকে। ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপাদান লিভারের এসিড ও কোলেস্টেরল ডিটক্সিফাই করতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও ঢেঁড়স লিভারে ফ্যাটের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই জন্যই লিভারকে সুস্থ রাখতে খাদ্য তালিকায় ঢেঁড়স রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। কেননা এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এবং উচ্চ ভিটামিন সি। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। রক্তে হোয়াইট ব্লাড সেল তৈরি করতে ভিটামিন সি ভূমিকা রাখে। যার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যার কারণে বাইরের রোগ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে পারে না এবং শরীর সুস্থ থাকে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ঢেঁড়স খেতে পারেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে - ঢেঁড়স নিয়মিত খাওয়ার ফলে এটা থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। আর এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে আমাদের শরীরে থাকা ক্ষতিকর টক্সিন উপাদান কোষদের গঠনে পরিবর্তন করার কোন সুযোগ দেয় না। আর এর কারণেই ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই ক্যান্সার থেকে দূরে থাকতে খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ঢেঁড়স খেতে পারেন।

রক্তশূন্যতা দূর করে - ঢেঁড়সে রয়েছে হিমোগ্লোবিন, আয়রন এবং ভিটামিন কে। যা দেহের রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা দূর করে, প্রয়োজনীয় লাল প্লেটলেট তৈরি এবং দেহের দুর্বলতা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে থাকে। তাই রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য আপনারা আপনাদের খাদ্য তালিকায় ঢেঁড়স যুক্ত করতে পারেন।

ওজন কমাতে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার শরীরে পাওয়া যায়। যা খেলে পেট দীর্ঘক্ষণ যাবৎ ভরা থাকে এবং ভিটামিন উপাদান গুলোও দীর্ঘক্ষণ যাবৎ দেহে থাকতে দেখা যায়। যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। তাছাড়াও ঢেঁড়সে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় এটি খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না বরং ওজন কমার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

খারাপ কোলেস্টেরল কমায় - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে হার্ট সুস্থ থাকে। কেননা এটি খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। যার কারণে হার্টকে সুস্থ রাখতে এটি ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ঢেঁড়স হলো ফাইবার সমৃদ্ধ। যার কারণে এই সবজিটি খেলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। যার ফলে এটি হার্টের সুস্থতার জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। 

অস্টিওপোরোসিস ঠেকাতে সাহায্য করে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এতে থাকা ভিটামিন কে শরীরে পাওয়া যায়। যা হাড়ের কাঠামো ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এমনকি এটি খাওয়ার ফলে অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার অসুখকেও ভালো করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও এটি হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে থাকে।

চোখের সমস্যা দূর করে - ঢেঁড়স  খাওয়ার ফলে এটি চোখের নানা ধরনের সমস্যা ভালো করে থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিন, লুটিন ইত্যাদি উপাদান। যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে থাকে। এছাড়াও এটি গ্লুকোমা, ছানি প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ দূরে রাখে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এতে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। আর এর কারণে নানা ধরনের ছোট খাটো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে শরীরের নানা উপকার হয়ে থাকে। ঢেঁড়সে থাকা পেকটিন অন্ত্রের ফোলাভাব দূর করে এবং সেই সাথে অন্ত্র থেকে বর্জ্য সহজেই পরিষ্কার করে থাকে। আর এর কারণেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা প্রতিরোধ হয়ে থাকে। এছাড়াও ঢেঁড়সে থাকা সলিউবল ফাইবার পেকটিন রয়েছে। যা মূলত দেহের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ হয়ে থাকে। কেননা ঢেঁড়স এর ভেতরে রয়েছে লালা জাতীয় পদার্থ। যা মূলত রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছে তাদের নিয়মিত ঢেঁড়স খাওয়া উচিত। তবে ঢেঁরস খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। ডাক্তার খাওয়ার অনুমতি দিলে খেতে হবে। আর না অনুমতি দিলে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এতে থাকা পটাশিয়াম নামক উপাদান শরীরে পাওয়া যায়। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিশেষ ভাবে ভূমিকা রাখে। একই সঙ্গে এটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের সংখ্যা কমিয়ে দিয়ে হৃদরোগে ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে থাকে।

ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী - ঢেঁড়সের রসে এক ধরনের উপাদান রয়েছে যা ত্বককে কোমল ও উজ্জ্বল করতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। একই সঙ্গে এটি চুলের গোড়া শক্ত করে থাকে, চুল পড়া প্রতিরোধ করে থাকে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে থাকে। তাই চুল ও ত্বকের যত্নে ঢেঁড়সকে কাজে লাগাতে পারেন।

হজমে সাহায্য করে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে হজমের উন্নতি হয়ে থাকে। এতে থাকা উচ্চ পরিমাণে ফাইবার খাদ্যকে সহজেই হজম করে ফেলে। এছাড়াও ঢেঁড়স পেটের অতিরিক্ত গ্যাস, হজমজনিত কারণে পেট ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সহ আরো নানা সমস্যা প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে সহায়তা করে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা প্রতিরোধ হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক উপাদান। যেগুলো শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে খাদ্য তালিকায় ঢেঁড়স রাখতে পারেন। 

অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় - অনেক সময় দেখা যায় যে ডায়াবেটিস রোগীরা স্ট্রেস বা মানসিক চাপে আক্রান্ত হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। ঢেঁড়সে থাকা প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষ করে ভিটামিন সি এ ধরনের অক্সিডেটিভ স্টেস কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমে গেলে রক্তে শর্করার উঠানামা সহজেই নিয়ন্ত্রণ হয়ে যায়। তাই অক্সিডেটিভ স্টেস কমানোর ক্ষেত্রে ঢেঁড়স খেতে পারেন।

কিডনির উন্নতিতে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এতে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত যদি ঢেঁড়স খাওয়া যায়, তাহলে কিডনির ভেতরে যে সকল ক্ষতিকর পদার্থ জমে থাকে সেগুলো বেরিয়ে যায় এবং সেই সাথে কিডনির সুরক্ষা বজায় থাকে। এছাড়াও ঢেঁড়সে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক উপাদান কিডনির কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ঢেঁড়স কিডনির সংক্রমণ এবং অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

বিষণ্ণতা দূর করে - ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে শরীরের বিষন্নতা, দুর্বলতা এবং অবসাদ দূর হয়ে থাকে। তাই আপনারা আপনাদের শরীরের এ সকল সমস্যা দূর করতে খাদ্য তালিকায় ঢেঁড়স রাখতে পারেন।

ঢেঁড়সের এর অপকারিতা গুলোঃ

ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে যেমন বেশ কিছু উপকার সাধন হয়ে থাকে ঠিক তেমনি এটি খাওয়ার ফলে বেশ কিছু অপকারিতাও দেখতে পাওয়া যায়। ঢেঁড়সে অক্সলেট নামক এক ধরনের যৌগ থাকে। যার কারণে যদি কেউ অতিরিক্ত পরিমাণে ঢেঁড়স খায় তাহলে তার কিডনিতে পাথর হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও আগে থেকে যদি কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে।

তাহলে ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি আরো বেশি হতে পারে। ঢেঁরস খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। কেননা ঢেঁড়স কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ। যার কারণে একটি অতিরিক্ত খেলে ডায়রিয়া, গ্যাস ও অন্ত্রের প্রবাহের মতো নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাছাড়াও ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এতে থাকা ভিটামিন কে পাওয়া যায়। যেটির শরীরের রক্ত ঘন করতে কাজ করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ ধুন্দল এর ৮টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন  

যারা রক্ত ঘন করার ওষুধ খান তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই সময় ঢেঁড়স খেতে পারেন। কেননা এই সময় যদি ওষুধের সাথে ঢেঁড়স খাওয়া হয় তাহলে শরীরের রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই এটি একসাথে খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

ঢেঁড়স খাওয়ার নিয়ম

ঢেঁড়স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এ পর্বে আমরা ঢেঁড়স কিভাবে খেলে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো সঠিকভাবে পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। এজন্য প্রথমে আপনারা ৪ থেকে ৫টি ঢেঁড়স ভালো করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন। তারপর এটির দুই মাথা কেটে ফেলে দিবেন। এরপর একটি ছুরির সাহায্যে লম্বালম্বি ভাবে কেটে ফেলবেন। এরপর আপনারা একটি কাঁচের বৈয়াম নিবেন।

তারপর সেখানে পানি দিয়ে ঢেঁড়স গুলো রেখে দিবেন। এভাবে আপনারা কাঁচের বৈয়ামে ঢেঁড়স গুলো সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। তারপর সকালে ঘুম থেকে উঠে ঢেঁড়সের পানিটুকু ছেঁকে নিয়ে নিয়মিত এই পানটি খাবেন। তাহলে শরীর থাকবে চাঙ্গা এবং ডায়াবেটিস এর হাত থেকে রক্ষা পাবেন। এভাবে আপনারা ঢেঁড়সের পানি খেতে পারেন। তাছাড়াও আপনারা চাইলে কচি কচি ঢেঁড়স নিয়ে ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে কেটে এটা সামান্য বিট লবণ এবং সামান্য মরিচ মিশিয়ে দিয়ে সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন।

এভাবে খেলেও এর পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। যেহেতু ঢেঁড়সের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই আপনারা এর খোসা সহ খেতে পারেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে ঢেঁড়স ভাজি করেও খেতে পারেন। এভাবে খেলেও ভালো লাগে। এজন্য আপনারা তেল, পেঁয়াজ, রসুন এবং অন্যান্য মসলা অল্প পরিমাণে দিয়ে এটি ভালোভাবে রান্না করে খাবেন। মশলা এবং তেলের পরিমাণ বেশি দিলে এটি খেয়ে উপকারের বদলে অপকার বেশি হবে। তাই এটি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।

এছাড়াও ঢেঁড়সের বিভিন্ন ধরনের কারি বা তরকারি রান্না করা যায়। এভাবেও রান্না করে খেতে বেশ ভালো লাগে। অনেকেই আবার ঢেঁড়সের স্মুদি তৈরি করে খায়। এটি বিভিন্ন ফল সবজির সাথে মিশিয়ে স্বাস্থ্যকর একটি স্মুদি তৈরি করে খাওয়া যায়। চাইলে আপনারাও সেটা করে খেতে পারেন। এছাড়াও বাচ্চা বা বয়স্কদের জন্য ঢেঁড়সের সুপ তৈরি করা যায়। তাদেরকে এভাবে খাওয়ালে এর সুস্বাদু টেস্ট এবং পুষ্টিগুণ সহজেই পাওয়া যায়। এভাবে আপনারা ঢেঁড়সকে খেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় ঢেঁড়স খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় ঢেঁড়স খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ঢেঁরস খাওয়ার ফলে গর্ভকালীন সময়ে কি ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভকালীন সময়ে ঢেঁড়স খাওয়ার উপকারিতাঃ

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ - গর্ভকালীন সময়ে ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে ভিটামিন সি শরীরে পাওয়া যায়। কারণ ঢেঁড়স ভিটামিন সিতে পরিপূর্ণ। ভিটামিন সি দেহে আয়রন শোষনে সহায়তা করে থাকে। যা একজন শিশুর বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও ঢেঁড়স ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে উচ্চ রক্তচাপ এবং কার্ডিওভাসকুলার ব্যাধি প্রতিরোধ করে থাকে। তাছাড়াও ঢেঁড়স গর্ভকালীন সময়ে খাওয়ার ফলে এটি শিশুর রক্ত জালিকা, ত্বক এবং হাড়ের বিকাশে সহায়তা করে থাকে।

ফোলেট সমৃদ্ধ - ঢেঁড়স মূলত ফোলেট সমৃদ্ধ। এতে থাকা ফোলিক এসিড শিশুদের জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি রোধ করে থাকে। ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে গর্ভকালীন সময়ে শিশুর নিউরাল টিউবগুলির বিকাশ ঘটিয়ে থাকে। তাই গর্ভকালীন সময়ে ঢেঁরস খাওয়া অতি উত্তম।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ - ঢেঁড়স মূলত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। ঢেঁড়সে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যেগুলো আপনার শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও এটি ভ্রুনের বৃদ্ধির উন্নতিতে কাজ করে থাকে। তাছাড়াও এটি শিশুর মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার ব্যাধি এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ফাইবার সমৃদ্ধ - গর্ভকালীন সময়ে একজন মা যদি ঢেঁড়স খায় তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়াও ঢেঁড়সে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ভালো ঘুম হতে - গর্ভকালীন সময়ে একজন মা যদি ঢেঁড়স খায় তাহলে তার এই সময় ভালো ঘুম হবে। কেননা ঢেঁড়সের মধ্যে ট্রাইপটোফ্যানের মত অপরিহার্য অ্যামাইনো এসিড গুলো রয়েছে। যেগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং ভালো ঘুম হতে বিশেষ ভাবে কার্যকর। তাছাড়াও ঢেঁড়সের মধ্যে থাকা ফাইবার এবং তন্তু রক্তের মধ্যে গ্লুকোজ স্থির রাখে যার কারণে দেহ থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ গুলো বের হয়ে যায়। তাই ভালো ঘুম হতে গর্ভকালীন সময়ে ঢেঁড়স খাওয়া যেতে পারে।

গর্ভকালীন সময়ে ঢেঁড়স খাওয়ার নিয়মঃ 

গর্ভকালীন সময়ে ঢেঁড়স রান্না করার আগে এটিকে ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর সেগুলোকে কম আঁচে রান্না করতে হবে। আপনি ঢেঁড়স বিভিন্নভাবে রান্না করে খেতে পারেন। আপনি চাইলে ঢেঁড়সের টুকরো গুলোর উপর ডিম এবং পাউরুটির গুড়োর প্রলেপ দিয়ে ভেজেও খেতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে ঢেঁড়সের স্যুপ বা কারি বানিয়েও খেতে পারেন।

ঢেঁড়স খেলে কি এলার্জি হয়

ঢেঁড়স খেলে কি এলার্জি হয় এ সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এলার্জি সমস্যা তৈরি হয় কিনা তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। হ্যাঁ ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাধারণত এই সবজিটির সাথে এলার্জির কোন সম্পর্ক নেই।

তবে কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এই সবজিটি খাওয়ার ফলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এলার্জির সমস্যা তৈরি হলে প্রোটিওলাইটিক এনজাইম কিছু কিছু মানুষের ত্বকে বা অন্যান্য অংশে এলার্জির প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। তাছাড়াও কিছু মানুষের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সবজি বা খাদ্য উপাদানে এলার্জি থাকতে পারে। যা ঢেঁড়স খাওয়ার সময় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ বাঁধাকপির ১৩টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন   

আর অ্যালার্জির সমস্যা তৈরি হলে ত্বকের চুলকানি, ফুসকুড়ি, পেট খারাপ, বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট বা হাঁচির সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে এলার্জি সমস্যা তৈরি হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সেই সাথে ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে যাদের সমস্যা হয় তারা এই সবজিটি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

ঢেঁড়স ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা 

ঢেঁড়স ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ঢেঁড়স ভেজানো পানি খাওয়ার ফলে কি কি ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

ঢেঁড়স-ভেজানো-পানি-খাওয়ার-উপকারিতা
  • ঢেঁড়স ভেজানো পানিতে অ্যান্টিডায়াবেটিক প্রভাব রয়েছে। ৩০ পার হওয়ার পরই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা অনেক বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাই ঢেঁড়সের ভেজানো পানি পান করলে এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রে শর্করার শোষণকে ধীর করে রক্তে শর্করার পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও ঢেঁরসের ভেজানো পানিতে ডায়াবেটিস বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মূলত টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে থাকে। তাই এ ধরনের সমস্যায় ঢেঁড়স ভেজানো পানি পান করা উত্তম। 
  • যাদের পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য,  বদ হজমের সমস্যা রয়েছে তারা ঢেঁড়স ভেজানো পানি পান করতে পারেন। কেননা ঢেঁড়স ভেজানো পানি পান করলে এ ধরনের সমস্যাগুলো প্রতিরোধ হয়ে থাকে। এছাড়াও ঢেঁড়স মিউকিলেজ সমৃদ্ধ। এটি একটি জেলির মতো পদার্থ। যা পরিপাকতন্ত্রকে আরাম দেয়। এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে ঢেঁড়সের মিউকিলেজ অন্ত্রে প্রাকৃতিক লুব্রিকেন্ট হিসেবে কাজ করে যা মূলত কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে থাকে।
  • ঢেঁড়স মূলত ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ একটি সবজি। আর এই সকল উপাদান গুলো আমাদের শরীরের হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এক রিপোর্ট অনুযায়ী ভিটামিন কে হাড়ের খনিজকরণ এবং শক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এজন্যই ঢেঁড়স ভেজানো পানি খেলে হাড় সম্পর্কিত যাবতীয় রোগ প্রতিরোধ হয়ে থাকে।
  • যারা শরীরের ওজন নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত তারা চাইলে ঢেঁড়সের ভেজানো পানি পান করতে পারেন। কারণ ঢেঁড়সে ক্যালোরির তুলনায় ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে। ফাইবার পাকস্থলীতে গিয়ে জেলির মতো আকারে পরিণত হয়। যে কারণে ঢেঁড়সের ভেজানো পানি খেলেও মনে হয় পেট ভরে গেছে। আর যার কারণে এই পানি খেলে অল্পতেই পেট ভরে যায়, ক্ষুধা নিবারণ হয়ে যায়। যা ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ঢেঁড়সের পানি তৈরি করার পদ্ধতিঃ

এজন্য প্রথমে আপনাদের ৪ থেকে ৫টি ঢেঁড়স নিয়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর ২ পাশের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলে দিয়ে লম্বালম্বি ভাবে কেটে ফেলতে হবে। তারপর ২ গ্লাস খাবার পানি একটি পাত্রে নিয়ে তাতে ঢেঁড়সের টুকরাগুলো ভালোভাবে দিয়ে দিতে হবে। এরপর সারারাত ঢেঁড়সের টুকরোগুলোকে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।

আরো পড়ুনঃ লাল শাকের ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন   

এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে টুকরাগুলো আলাদা করে নিয়ে পানি ছেঁকে নিয়ে পান করতে হবে। সকালে এই পানি খালি পেটে পান করার চেষ্টা করবেন। তাহলে এর উপকারিতা গুলো সহজেই পেয়ে যাবেন। আর আমরা উপরের আলোচনায় ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে সেগুলো পড়ে আসতে পারেন।

ডায়াবেটিসে ঢেঁড়স এর উপকারিতা

ডায়াবেটিসে ঢেঁড়স এর উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ডায়াবেটিসের জন্য ঢেঁড়স কি রকম ভূমিকা রাখে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। ডায়াবেটিসের জন্য ঢেঁড়সের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা রয়েছে। আপনি জানলে অবাক হবেন ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে মাত্র ৩৩ ক্যালোরি রয়েছে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই ভালো একটি ব্যাপার।

ঢেঁড়সে ক্যালোরি কম হওয়ার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি এটি চমৎকার উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকে। ঢেঁড়স ফ্যাট মুক্ত এবং এতে কোনো ধরনের স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা কোলেস্টেরল থাকে না। আর এর কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে না। সাধারনত ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সবচেয়ে বেশি জরুরী। ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেননা ঢেঁড়সে রয়েছে ফাইবার এবং বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

যেগুলো শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। ঢেঁরস খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা যে কোন মুহূর্তে হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। আর এই কাজটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই কল্যাণকর। এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে ঢেঁড়স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ ঢেঁড়সে রয়েছে অ্যান্ডিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি নামক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

যেগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়াও ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ থাকে, ওজন নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে থাকে, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমে থাকে, দৃষ্টি শক্তি উন্নত হয়ে থাকে। তাই বলা যেতে পারে ডায়াবেটিসে ঢেঁড়সের ব্যাপক উপকারিতা রয়েছে। আর আমরা উপরের আলোচনায় ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে সেগুলো পড়ে আসতে পারেন।

ঢেঁড়সের পুষ্টিগুণ

ঢেঁড়সের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন আজকের এই পর্বে আমরা ঢেঁড়সের যাবতীয় পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে এ সকল পুষ্টিগুণ গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য নানা উপকারিতা বয়ে আনে নিচে সকল পুষ্টিগুন গুলো দেওয়া হলো

পুষ্টি উপাদান
আমিষ ১.৮ গ্রাম
ভিটামিন সি ২১.১ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ৮১ মিলিগ্রাম
লোহা ১ মিলিগ্রাম
শক্তি ৩৩ কিলোক্যালরি
কার্বোহাইড্রেটস ৭.০৩ গ্রাম
প্রোটিন ২ গ্রাম
ফ্যাট ০.১ গ্রাম
খাদ্যআঁশ ৩.২ গ্রাম
ফোলেট ৮৮ মাক্রোগ্রাম
ভিটামিন এ ৩৭৫ আইইউ
ভিটামিন ই ০.৩৬ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন ১ মিলিগ্রাম
লুটেইন ৫১৬ মাক্রোগ্রাম
ভিটামিন কে ৫৩ মাক্রোগ্রাম
সোডিয়াম ৮ মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ৩০৩ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৫৭ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৬৩ মিলিগ্রাম
জিংক ০.৬০ মিলিগ্রাম

ঢেঁড়স যাদের জন্য ক্ষতিকর

ঢেঁড়স যাদের জন্য ক্ষতিকর এই সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জেনে নেওয়া উচিত। কারণ ঢেঁড়স সবার জন্য উপকারিতা বয়ে আনে না। এমন কিছু মানুষ আছে যাদের ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে ক্ষতি সাধন হতে পারে। আজকের এই পর্বে আমরা যাদের ঢেঁরস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। যে সকল রোগীরা কিডনি স্টোনে ভুগছেন তাদের জন্য ঢেঁড়স খাওয়া উচিত নয়। কেননা ঢেঁড়সে অক্সালেটের পরিমাণ বেশি রয়েছে। যা কিডনি স্টোন সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।

ঢেঁড়স-যাদের-জন্য-ক্ষতিকরতাই তাদের এই সময় ঢেঁড়স খাওয়া উচিত নয়। ঢেঁড়সে ভিটামিন কে রয়েছে। তাই যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ খাচ্ছেন তারা এই সময় ঢেঁড়স খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়াও ঢেঁড়স অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ডায়রিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন। মূলত এ সকল ব্যক্তিরা ঢেঁড়স খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন। আর আমরা উপরের আলোচনায় ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে সেগুলো পড়ে আসতে পারেন।

ঢেঁড়স খেলে কি গ্যাস হয়

ঢেঁড়স খেলে কি গ্যাস হয় এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা হয় কিনা সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। মূলত ঢেঁড়স একটি স্বাস্থ্যকর সবজি। এটি খাওয়ার ফলে দেহের নানা উপকার হয়ে থাকে। তবে এটি নিয়ম মেনে না খেলে এর উপকারের বদলে অপকার হয়ে থাকে। তেমন একটি অপকার হচ্ছে গ্যাসের সমস্যা তৈরি হয়।

আরো পড়ুনঃ  কলার মোচার ১৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন  

অর্থাৎ আপনি যদি প্রয়োজন এর অতিরিক্ত ঢেঁড়স খাওয়ার চেষ্টা করেন। তাহলে গ্যাস, এসিডিটি, বদহজম, পেটব্যথা, ডায়রিয়া সহ আরো নানা সমস্যা তৈরি হবে। তাই ঢেঁড়স নিয়ম মেনে খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে কোন ধরনের সমস্যা তৈরি হবে না। ঢেঁড়স মূলত একটি গুণাগুণ সম্পন্ন সবজি। যেটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের অনেক ধরনের উপকার হয়ে থাকে। আর আমরা উপরের আলোচনায় ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে সেগুলো পড়ে আসতে পারেন।

লেখকের শেষ কথা

উপরের আলোচনা থেকে আমরা ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এসেছি। আমরা আরো জানতে সক্ষম হয়েছি ঢেঁড়স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও। ঢেঁড়স একটি স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন সবজি। এটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের নানা উপকার হয়ে থাকে। আর এ সকল উপকারিতা গুলো আমাদের সকলেরই হয়তো কম বেশি অজানা।

আমি উপরের আলোচনায় ঢেঁড়সের যাবতীয় গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনারা যদি উপরের আলোচনাটি ভালোভাবে পড়তে পারেন। তাহলে ঢেঁড়সের যাবতীয় গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আরও জানতে পারবেন এটি কিভাবে খেলে এর উপকার পাওয়া যায়? কিভাবে খেলে অপকার হয় তার সম্পূর্ণ কিছু জানতে পারবেন। আশা করছি উপরের আলোচনাটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রিটেক্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url